‘বঙ্গবন্ধু- ১’ স্যাটেলাইটের পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ

'বঙ্গবন্ধু- ১' স্যাটেলাইটের পূর্ণাঙ্গ যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ


সেবা ডেস্ক: 'বঙ্গবন্ধু- ১' স্যাটেলাইটের সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে 'সজীব ওয়াজেদ জয় গাজীপুর ও সজীব ওয়াজেদ জয় বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র' উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

গত ৩১ জুলাই মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গাজীপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় অবস্থিত ভূ-উপগ্রহের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র দুটি উদ্বোধন করেন। 

গত ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে মার্কিন কোম্পানি স্পেসএক্স-এর সর্বাধুনিক রকেট ফ্যালকন-৯ এর মাধ্যমে কক্ষপথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট 'বঙ্গবন্ধু -১'। 

এরই মধ্যে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে গেছে জাতির গর্বের এই স্যাটেলাইটটি। স্যাটেলাইটটি থেকে পাওয়া সংকেত গ্রহণ ও সংকেত পাঠাতে উদ্বোধন করা হয়েছে গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ার দুটি কন্ট্রোল সেন্টার অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।

'বঙ্গবন্ধু- ১' স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের একটি বাড়তি আয়ের সুযোগ হলো যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করবে। স্যাটেলাইটটিতে রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার সক্ষমতা। 

এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার দেশের অভ্যন্তরীণ কাজে ব্যবহার করা হবে এবং ২০টি ট্রান্সপন্ডার বিদেশি রাষ্ট্রের কাছে ভাড়া দেওয়ার জন্য রাখা হবে। ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২৬টি হচ্ছে কেইউ ব্যান্ডের এবং ১৪টি সি ব্যান্ডের। 

এক সময় বাংলাদেশ বহু অর্থ ব্যয় করে অন্য দেশের কাছ থেকে স্যাটেলাইট সেবা গ্রহণ করত। এখন বাংলাদেশ নিজে অন্য দেশকে স্যাটেলাইট সেবা পেতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে কমবে দেশের ব্যয়।

সজীব ওয়াজেদ জয় গাজীপুর ও সজীব ওয়াজেদ জয় বেতবুনিয়া ভূ-কেন্দ্র উদ্বোধনকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'দেশের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা লাভ করতে পারবে। যেহেতু আমাদের দেশে থেকেই স্যাটেলাইটটির নিয়ন্ত্রণ হবে সেক্ষেত্রে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের স্পেস বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান আরো সমৃদ্ধ করতে হবে।' আমাদের দেশে প্রতি বছর অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে তারা নানা রকম সুনাম অর্জন করছেন তাদের কাজের মাধ্যমে, তাদের শিক্ষার মাধ্যমে। সেই কাজের ব্যবস্থা এবার করে দেয়া হবে দেশের মাটিতে'। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  আরও বলেন, 'দেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। এর জন্য প্রয়োজন পরমাণু বিজ্ঞানী। এসব কাজে যদি আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের সুযোগ করে দেয়া হয় তাহলে দেশেই তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। কাজের সন্ধানে তাদের পরিবার ছেড়ে, দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যেতে হবে না'।

১৯৭৪ সালে স্বাধীনতার তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধু রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেন। যার সাহায্যে তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদানের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ২০১৮ সালে সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্যোগে এটি পূর্ণতা পেলো। 

জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। বর্তমানে ১৬ কোটি জনগণের ৯ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। এই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার সাথে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে জনগণকে দক্ষ করে তোলা হবে। 

নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে শেখ মুজিবর রহমানের রেখে যাওয়া স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন তাঁর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। মুজিবের হাত ধরে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে সজীবের হাতে। এজন্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র দুটির নাম সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে নামকরণ করা হয়েছে।

সরকার জনগণের সেবায় কাজ করছে এবং জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকবে। দেশের উন্নয়ন আওয়ামী লীগের হাত ধরেই সম্ভব। গত ১১মে তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টার উদ্যোগে ৫৭তম স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। 

শুধু তাই নয় তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে উপচে পড়া ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে এই দেশ। অচিরেই উন্নত দেশের তালিকায় প্রবেশ করবে জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ।


//


from Blogger http://bit.ly/2O9NcV8

Comments